কাজী নজরুল ইসলাম অথবা, আমার প্রিয় কবি রচনা

কাজী নজরুল ইসলাম অথবা, আমার প্রিয় কবি রচনা 

কাজী নজরুল ইসলাম অথবা, আমার প্রিয় কবি রচনা

বাংলা ২য় পত্র রচনা : 

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আশা করি তোমরা ভাল আছো । তো আজকে তোমাদের জন্য নিয়ে এলাম  কাজী নজরুল ইসলাম অথবা, আমার প্রিয় কবি রচনা  উপর রচনা । এই রচনা তোমরা যারা পরীক্ষার্থী তাদের অনেক কাজে লাগবে । তো তোমাদের ভাল লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে Facebook messenger,  Whatsapp, Telegram, Instagram এবং IMO তে শেয়ার করতে পারো ।

কাজী নজরুল ইসলাম  সম্পর্কে কিছু কথাঃ 

ইসলাম, কাজী নজরুল (১৮৯৯-১৯৭৬)  বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং অবিভক্ত বাংলার সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। নজরুল ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ  (২৪ মে ১৮৯৯) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কাজী ফকির আহমদ ছিলেন মসজিদের  ইমাম ও মাযারের খাদেম। নজরুলের ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। 

১৯০৮ সালে পিতার মৃত্যু হলে নজরুল পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য হাজী পালোয়ানের মাযারের সেবক এবং মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করেন। তিনি গ্রামের  মকতব থেকে নিম্ন প্রাথমিক পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হন। শৈশবের এ শিক্ষা ও শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে নজরুল অল্পবয়সেই ইসলাম ধর্মের মৌলিক আচার-অনুষ্ঠান, যেমন পবিত্র  কুরআন পাঠ,  নামায, রোযা,  হজ্জ,  যাকাত প্রভৃতি বিষয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ লাভ করেন। পরবর্তী জীবনে বাংলা সাহিত্য ও সঙ্গীতে ইসলামি ঐতিহ্যের রূপায়ণে ওই অভিজ্ঞতা সহায়ক হয়েছিল।

বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে কবির অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক বিশেষ সমাবর্তনে কবিকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালের জানুয়ারি মাসে নজরুলকে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান এবং ২১ ফেব্রুয়ারি ‘একুশে পদকে’ ভূষিত করে। ২৯ আগস্ট ১৯৭৬ (১২ ভাদ্র ১৩৮৩) ঢাকার পিজি হাসপাতালে কবি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের উত্তর পার্শ্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয় বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে। 

কাজী নজরুল ইসলাম অথবা, আমার প্রিয় কবি রচনা 

ভূমিকা :

বাংলা সাহিত্যের বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বিদ্রোহী কবি নামে খ্যাত নজরুল বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, নাট্যকার, গীতিকার, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, সুরকার ও শিল্পী। তিনি অল্প সময়ে সাহিত্যে বিশেষ অবদান রেখে স্মরণীয় হয়ে আছেন।



জন্মপরিচয়:

১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ই জ্যৈষ্ঠ মোতাবেক ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে কাজী নজরুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম কাজী ফকির আহমদ ও মাতার নাম জাহেদা খাতুন। বালাজীবন : কাজী নজরুল ইসলামের ডাক নাম ছিল দুখু মিয়া। তাঁর বাল্যজীবন ছিল ছন্নছাড়া ধরনের। দুঃখ-দুর্দশার মধ্য দিয়ে কবি তাঁর বাল্যজীবন কাটান। অল্প বয়সেই তিনি পিতৃহারা হন। বাল্যকালে তিনি গ্রাম্য মক্তবে শিক্ষালাভ করেন, পরে স্কুলে ভর্তি হন। অর্থকষ্টের দরুন উপায়ান্তর না দেখে তিনি আসানসোলে এক রুটির দোকানে মাসিক পাঁচ টাকা বেতনে চাকরি গ্রহণ করেন। 

সেখানে একদিন তিনি আসানসোলের পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টরের সুনজরে পড়েন। ইন্সপেক্টর তাঁকে সঙ্গে এনে ময়মনসিংহের ত্রিশাল জেলার দরিরামপুর হাই স্কুলে ভর্তি করে দেন, কিন্তু সেখানে তিনি বেশিদিন থাকেননি। আবার তাঁর নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে কবি যখন দশম শ্রেণির ছাত্র, তখন প্রথম মহাযুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে। তিনি ব্রিটিশ সৈন্যদলের ৪৯ নম্বর বাঙালি পল্টনে যোগ দেন। যুদ্ধশেষে তিনি ফিরে আসেন।



যৌবনকাল : 

যৌবনে তিনি ব্রিটিশ শাসনের কবল থেকে দেশের মানুষদের, মুক্ত করার অভিপ্রায়ে তাদের স্বাধীন চেতনা সৃষ্টির জন্য নানাভাবে সচেষ্ট হন। তিনি 'ধূমকেতু' নামে একটি অর্ধ-সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করেন। এ পত্রিকায় ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে এবং দেশবাসীর পক্ষে বিভিন্ন লেখা ছাপা হতো। ফলে ইংরেজ সরকার 'ধূমকেতু' পত্রিকাটি বন্ধ করে দেয় এবং কবি নজরুলকে জেলে বন্দি করে।

কাব্য-প্রতিভা : 

নজরুল ইসলাম ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। পুরাণ, কুরআন, গীতা, মহাভারতের গভীর জ্ঞান এবং আরবি, ফারসি, সংস্কৃত, বাংলা শব্দ ভান্ডারের চাবিকাঠি ছিল তাঁর হাতে। সংগীত রচনা ও সুর প্রদানে তাঁর অসাধারণ পাণ্ডিত্য। ছোটদের জন্য তিনি অসংখ্য ছড়া ও কবিতা লিখেছেন। বাংলাদেশের প্রায় সব শিশুই তাঁর কবিতা নিয়ে

পাঠ শুরু করে-

'ভোর হলো দোর খোল, খুকুমনি ওঠরে ওই ডাকে জুঁই শাখে ফুলখুকী ছোটরে।'


জাগরণের কবি : 

নজরুল ইসলাম ছিলেন জাগরণ ও যৌবনের কবি। তিনি তাঁর গান, কবিতার বাণী ও ছন্দের মাধ্যমে ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে জনগণকে জাগিয়ে তোলেন। বেনিয়া ব্রিটিশশাসিত ভারতবর্ষকে তিনি এক বিশাল কারাগার হিসেবে অভিহিত কর প্রচণ্ড দ্রোহে ঘোষণা করেন--কারার ওই লৌহ কপাট, ভেতো ফেল কররে লোপাট রক্ত জমাট শিকল পূজার পাষাণবেদী ।



ইন্তেকাল : 

১৯৪২ সালের ১০ই অক্টোবর কবি নজরুল ইসলাম মস্তিষ্কের পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে বাহুশক্তি হারিয়ে ফেলেন। ফলে অমিত সম্ভাবনাময় এক কারা প্রতিভার অপমৃত্যু ঘটে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ২৪শে মে বঙ্গবন্ধু সরকার কর্তৃক রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে তাঁকে কলকাতা থেকে ঢাকায় আনা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে এবং বাংলাদেশ সরকার তাঁকে 'একুশে পদক' এবং জাতীয় কবির মর্যাদা প্রদান করে। ১৯৭৬ সালের ২৯শে আগস্ট ঢাকার পিজি হাসপাতালে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইন্তেকাল করেন।

তাঁর প্রার্থনা সংগীত 'মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই' 

– অনুসারে তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উত্তর পাশে সমাহিত করা হয়।


উপসংহার : 

কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর কবিতা আমাদের জাতীয় চেতনারই এক প্রতীক। তাঁর বিদ্রোহী কবিতা ও গান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছিল। তাই বাংলাদেশি ও বাংলাভাষী সব মানুষের মনে কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর এ অবদানের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।



আরও পড়ুন...............

  • বাংলা রচনা : বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও তার প্রতিকার
  • ভাবসম্প্রসারণ : বিদ্যার সঙ্গে সম্পর্কহীন জীবন অন্ধ

  • বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা
  • বাংলা প্রবন্ধ রচনা : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী


নতুন নতুন ইসলামিক কন্টেন্ট  পড়তে আমাদের ওয়েব সাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Be alert before spamming comments.

নবীনতর পূর্বতন

Sponsored

Responsive Ad