চার কুল হচ্ছে- সূরা কাফিরূন, ইখলাছ, ফালাক ও নাস - Fazilot of Four Kul

 চার কুল হচ্ছে- সূরা কাফিরূন, ইখলাছ, ফালাক ও নাস

চার কুল হচ্ছে- সূরা কাফিরূন, ইখলাছ, ফালাক ও নাস - Fazilot of Four Kul



চার কুল নামে পরিচিত পবিত্র কুরআনের চারটি সূরা। যথা: সূরা কাফিরূন, সূরা ইখলাছ, সূরা ফালাক ও সূরা নাস। এই চারটি সূরা খুবই ফজিলতপূর্ণ। নিন্মে হাদিসের আলোকে সূরা সমূহের ফজিলত জেনে নেই। চার কুলের অনেক অনেক ফযীলত রয়েছে । আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিয়মিত এই ৪ কুল বা 4 Kul তিলাওয়াত করা ।

  • উরওয়া ইবনে নওফাল তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কেন এসেছো?’ তিনি বললেন, এজন্য এসেছি— যাতে আপনি আমাকে কিছু শিক্ষা দেন; যা আমি শোয়ার সময় পড়তে পারি। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন তুমি বিছানায় যাবে, তখন “কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরুন” পড়বে। তারপর এটি শেষ করে শুইবে। কেননা, এটি শিরক থেকে মুক্ত করে।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ২৬৫২৮; নাসায়ি, হাদিস : ১০৫৬৯)
  • আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুল (সা.) প্রতি রাতে যখন বিছানায় আসতেন, তখন দুই তালুকে একত্র করতেন। তারপর তাতে ফুঁ দিয়ে— ‘কুল হুয়াল্লাহু আহাদ’ এবং ‘কুল আউজু বিরাব্বিল ফালাক’ ও ‘কুল আউজু বিরাব্বিন নাস’ পড়তেন। তারপর শরীরের যতটুকু অংশ সম্ভব মুছে দিতেন। শুরু করতেন মাথা ও চেহারা ও শরীরের সামনের অংশ থেকে। এভাবে তিনবার করতেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৪৮৫৩; সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০১৭)
  • – হাদিসের অন্য বর্ণনায় এসেছে, শয়তানের অনিষ্ট ও জাদুটোনা থেকে বাঁচতে সকাল-সন্ধ্যায় এ ৩ সুরার আমল খুবই কার্যকরী। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা সুরা ইখলাস ও এই দুই সুরা ( সুরা ফালাক ও সুরা নাস) পড়বে সে সব বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকবে।’ (তিরমিজি)
  • – হজরত উকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমার কি জানা নেই আজ রাতে আমার ওপর যে আয়াতগুলো নাজিল হয়েছে এগুলোর মতো কোনো আয়াত দেখাও যায়নি এবং শোনাও যায়নি। আর তাহলো- কুল আউজু বি রাব্বিল ফালাক ও কুল আউজু বি রাব্বিন নাস।’ (মুসলিম)
  • – রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে তা তাকে বালা-মসিবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট হয়।’ (ইবনে কাসির)



উচ্চারণ - সূরা কাফিরূন

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরূন। লা তা’বুদু মা তা’বুদ। ওয়ালা আনতুম আ’বিদুনা মা আ’বুদ। ওয়ালা আনা আ’বিদুম্মা আবাত্তুম। ওয়ালা আনতুম আ’বিদুনা মা আ’বুদ। লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়াদ্বীন।

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ (۱) لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ (۲) وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ (۳) وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدتُّمْ (۴) وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ (۵) لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِين (۶

ফযিলত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি একবার সূরা কাফিরূন পড়বে তার জন্য এক চতুর্থাংশ কুরআনের সাওয়াব লেখা হবে। (তিরমিযী- ২৮৯৩)

সূরা কাফিরূন, ইখলাছ, ফালাক ও নাস


উচ্চারণ - সূরা ইখলাছ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

কুল হুওয়াল্লা-হু আহাদ। আল্লা-হুসসামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ। ওয়া লাম ইয়া কুল্লা-হু কুফুওয়ান আহাদ।

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ (۱) اللَّهُ الصَّمَدُ (۲) لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ (۳) وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ (۴

ফযিলত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সূরা ইখলাছ ১০ বার পাঠ করবে, আল্লাহ সেই ব্যক্তির জন্য জান্নাতে এক মহল নির্মাণ করবেন। (মুসনাদে আহমদ)

উচ্চারণ - সূরা ফালাক

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

কুল আ’ঊযু বিরব্বিল ফালাক্ব। মিন শার-রিমা খালাক্ব। অমিন শাররি গ-সিক্বিন ইযা-অক্বাব। অমিন শাররি ন্নফ্ফা-সা-তি ফিল উক্বদ। অমিন শাররি হা-সিদিন ইযা-হাসাদ।

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
قُلْ أَعُوذُ بِرَ‌بِّ الْفَلَقِ (۱) مِن شَرِّ‌ مَا خَلَقَ (۲) وَمِن شَرِّ‌ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ (۳) وَمِن شَرِّ‌ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ (۴) وَمِن شَرِّ‌ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ (۵

ফযিলত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সূরা ফালাক ও নাস এই সূরা দুইটি তুলনাহীন। তিনি প্রত্যেক নামাজের শেষে সূরা ফালাক ও নাস পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন। (তিরমিযী– ২৯০২ ও ২৯০৩)

উচ্চারণ - সূরা নাস

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

কুল আ’উযু বিরাব্বিন নাস। মালিকিন নাস। ইলাহিন নাস। মিন শাররিল ওয়াস ওয়াসিল খান্নাস। আল্লাযী ইউওয়াসবিসু ফিস ছুদুরিন্নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্নাস।

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ (۱) مَلِكِ النَّاسِ (۲) إِلَهِ النَّاسِ (۳) مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ (۴) الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ (۵) مِنَ الْجِنَّةِ وَ النَّاسِ (۶

ফযিলত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কোন বিপদাপদ থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থণা করার জন্য সূরা ফালাক ও নাস এর ন্যায় আর কোন সূরা পবিত্র কুরআনে নেই। (আবু দাউদ- ১৪৬৩)

হাদিস শরীফে হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চার কুল সম্পর্কে অনেক ফযিলত বর্ণনা করেছেন। অত:পর চার কুল এর ফজিলত সম্পর্কে আরো জানতে আমাদের অন্যান্য পোষ্টগুলো দেখার অনুরোধ রইলো। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক আকাঈদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বিদার উপর জীবন অতিবাহীত করার তাওফিক দান করুক। আমীন









একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Be alert before spamming comments.

নবীনতর পূর্বতন

Sponsored

Responsive Ad