ভাবসম্প্রসারণ : শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে

 ভাবসম্প্রসারণ : শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে ।
(শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে)

ভাবসম্প্রসারণ : শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে | Śāsana karā tāra'i sājē



মূলভাব : শাসনের পিছনে উদ্দেশ্য হল যে কোন অন্যায় সংশোধন করা। তাই কোনো প্রতিশোধমূলক প্রবণতা ছাড়াই সহানুভূতিশীল সম্পর্ক থাকলে নিয়মটি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। মূলত, শাসন হয় কল্যাণের জন্য। কোনো নির্যাতনের উদ্দেশ্য নয়। শাসক অত্যাচারী হলে তার দ্বারা কখনো ন্যায়বিচার করা যায় না।


সম্প্রসারিত-ভাব : যে অন্যায় করে সে অপরাধী। অপরাধীরা স্বাভাবিকভাবেই শাস্তি পায়। এবং কোন ত্রুটি দূর করার জন্য শাসনের নিয়ম রয়েছে। সমাজে প্রচলিত অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা সমাজের কল্যাণের জন্য একান্ত প্রয়োজন। শাসন যদিও নির্মমও হয় তবে তা শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে অপরিহার্য। অপরাধের শাস্তি প্রদান দগ-দাতা বা বিচারকের অত্যাচার নয়, বরং তা অন্যায়, অনাচারের হাত থেকে সমাজের প্রতিটি মানুষকে রক্ষা করার একটি উপায়। কিন্তু যে শাস্তি নিষ্ঠুর, সমাজ বিরোধী, বিভীষিকার সৃষ্টি করে তা ক্ষণিকের সফলতা লাভ করলেও অন্যায়কে সমূলে উচ্ছেদ করতে পারে না। প্রেম প্রীতি মমত্ববোধ ও সমবেদনা প্রভৃতির স্পর্শ লাভ করলে প্রকৃতির মানুষ্য ও সুপ্ত মানুষত্বে জাগিয়ে তোলার সুযোগ পায়। 

সমাজ থেকে পাপ ও অন্যায় দূর করতে হলে অন্যায়কারীকে শাস্তি পেতে হবে। তবে শাস্তি দেওয়ার সময় বিচারকের হৃদয় অত্যাচারীর প্রতি সদয় হতে হবে। বিচারকের হৃদয় যদি সমবেদনায় আন্দোলিত হয় তবে তা অপরাধীর হৃদয় স্পর্শ করে।ফলে সে তার হারানো বিবেক বুদ্ধি ফিরে পাবে। এ অনুশোচনা ও বিবেকের দংশন অপরাধীকে মনুষ্যত্বের পথে ফিরিয়ে আনবে। শাসক ও বিচারকের মূল লক্ষ্য চরিত্রের ত্রুটি সংশোধণ। যার সংশোধন করা হবে তার প্রতি স্বাভাবিক সহানুভূতি থাকা আবশ্যক। 

ভালো করার ইচ্ছা থেকেই এই করুণার জন্ম। ভালো করার উদ্দেশ্য না থাকলে মানুষকে বিচার করে লাভ নেই। ভালোবাসা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষার পেছনে ভালোবাসা, স্নেহ, মমতা কাজ করে। আর এই ইচ্ছা থাকলে ভুল সংশোধনে কোনো মন্দ কাজ করা যায় না। আর পরোপকার থাকলে শাসনে কল্যাণ ফুটে উঠবে। অর্থাৎ, বিচারকের আদর্শ হওয়া উচিত পাপকে ঘৃণা করা পাপীকে নয়। এ আত্ববিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে সোহাগের মনোভাব নিয়ে বিচার করলে সেটা মনবতাবিরোধী হবে না। স্নেহভাজনকে শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে তার কল্যাণ সাধন করা। যেখানে এ মনোভাব থাকে না সেখানে শাস্তিদান অত্যাচর মাত্র। কিন্তু যেখানে সোহাগের মনোভাব বিরাজ করে সেখানে শাস্তিদান করা সমাজের জন্য কল্যাণকর।


বাংলা ২য় পত্রের সারাংশ এবং সারমর্ম :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Be alert before spamming comments.

নবীনতর পূর্বতন

Sponsored

Responsive Ad