অজু ভঙ্গের কারণ কয়টি? অজু ভঙ্গের কারণ সমূহ - 10 Minute Madrasah

অজু ভঙ্গের কারণ কয়টি? অজু ভঙ্গের কারণ সমূহ - Oju vonger karon 10 Minute Madrasah

 

অজু ভঙ্গের কারণ কয়টি? অজু ভঙ্গের কারণ সমূহ 

নামাজ পড়ার পূর্বশর্ত হলো অজু। অজু নামাজের চাবি। অজু ছাড়া নামাজ হয় না। অজু করার পর যদি ভেঙে যায়, তখন নতুন করে অজু করে নেওয়া উত্তম। অজুর সওয়াব ও ফজিলত অনেক বেশি। তো আজকের পোস্ট থেকে অজুর ভঙ্গের কারণ সমূহ । অজু ভঙ্গের অনেক অনেক কারণ রয়েছে । আমরা সবার জানার সুবিধার্থে আলাদা আলাদাভাবে পার্ট করে দিয়েছি ।

অজু ভঙ্গের কারণ
স্বপ্নে অজু করতে দেখলে কি হয়
অজু করার দোয়া
অজু ও গোসলের ফরজ
অজু ভঙ্গের কারণ ৭টি
মেয়েদের অজু ভঙ্গের কারণ
তাহিয়াতুল অজু
অজু ভঙ্গের কারণ কয়টি

ক্ষত ইত্যাদি থেকে রক্ত বের হওয়ার ৫টি হুকুম

===============

❁ রক্ত, পুঁজ বা হলুদ  রঙের পানি শরীরের কোন স্থান থেকে বের হয়ে এমন স্থানে গড়িয়ে পড়ল বা গড়িয়ে পড়ার  শক্তি  ছিলো  যা  ধৌত  করা  অযু  বা  গোসলের  মধ্যে   ফরয।  তাহলে   অজু    ভঙ্গ  হয়ে   যাবে।    (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩০৪ পৃষ্ঠা) 

❁ রক্ত যদি দেখা যায় বা বের হয়  কিন্তু গড়িয়ে পড়েনি, যেমন- সূঁচের মাথা বা  ছুরির  ধারালো    প্রান্ত  ইত্যাদি  বিদ্ধ  হওয়ার   কারণে রক্ত    বের    হয়   বা   দেখা   গেলো   অথবা    দাঁত   খিলাল করলো    বা  মিসওয়াক  করলো    বা     আঙ্গুল  দ্বারা  দাঁত মাজলো অথবা দাঁত দ্বারা কোন  জিনিস  যেমন-আপেল ইত্যাদি  কামড়  দিলো  এবং  এতে  রক্তের  চিহ্ন  দেখা  গেলো অথবা   নাকের  ছিদ্রে আঙ্গুল প্রবেশ করাল এবং  এতে  রক্তের লালচে রং দেখা গেলো  কিন্তু তা প্রবাহিত হওয়ার    মত     ছিলো   না    তাহলে    অযু   ভঙ্গ   হবে   না। (প্রাগুক্ত)   

❁   যদি  রক্ত  বের  হয়ে     প্রবাহিত   হয়  কিন্তু প্রবাহিত হয়ে এমন স্থানে  না পৌঁছে যা ধৌত করা অযু বা গোসলের মধ্যে ফরয, যেমন-চোখে দানা ছিলো তা ফেঁটে বের  না হয়ে ভিতরেই  রয়ে  গেলো।  অথবা রক্ত  বা পুঁজ বের  না হয়ে কানের ভিতরেই রয়ে গেলো  অযু  ভঙ্গ  হবে  না।  (প্রাগুক্ত,  ২৭  পৃষ্ঠা)  

❁   ক্ষতস্থান   খুবই বড়  এবং  এতে  আর্দ্রতাও  দেখা  যাচ্ছে,  কিন্তু  আর্দ্রতা  যতক্ষণ   পর্যন্ত   প্রবাহিত   হবে    না   অযু    ভঙ্গ   হবে   না। (প্রাগুক্ত) 

❁  জখমের (ক্ষতস্থানের) রক্ত বারবার    মুছে ফেলার   কারণে  প্রবাহিত হতে পারেনি।  এখন  দেখতে হবে    যতগুলো   রক্ত   মুছে   ফেলা   হলো,    তা   প্রবাহিত হওয়ার মতো ছিলো  কিনা? যদি  প্রবাহিত হওয়ার মত ছিলো তাহলে অযু ভঙ্গ   হয়ে যাবে।  আর যদি প্রবাহিত হওয়ার মত না হয়ে  থাকে, তাহলে অযু  ভঙ্গ হলো না। (প্রাগুক্ত)


ঠান্ডার কারণে অঙ্গ ফেঁঠে যায় তখন কি করা উচিত ?


ঠান্ডা   ইত্যাদির  কারণে   যদি    অঙ্গ  ফেঁঠে    যায়,  ধৌত করতে পারলে ধৌত    করবে। ঠান্ডা পানি ক্ষতি করলে তখন     পানি      গরম        করার     সামর্থ     থাকলে      করাটা ওয়াজীব।  আর  যদি   গরমের   দ্বারাও    ক্ষতি  হয়,  তবে মাসেহ করবে। যদি মাসেহ দ্বারাও ক্ষতি হয়, তখন এর উপর  যে  পট্টি   বা  ঔষধের  প্রলেপ  রয়েছে   এর  উপর  পানি প্রবাহিত  করবে। এটাও  যদি ক্ষতি হয়,  তখন  ঐ পট্টি      বা    ঔষধের    প্রলেপের    উপর    পরিপূর্ণ     মাসেহ করবে। এর দ্বারাও যদি ক্ষতি  হয়, তবে ছেড়ে  দিবে। এটা  ক্ষমা।  (ফতোওয়ায়ে  রযবীয়া  (সংকলিত)  ,    ৪র্থ খন্ড, ৬২০ পৃষ্ঠা)


অজুর মধ্যে মেহেদী ও সূরমার মাসয়ালা

================

❁ মহিলার   হাতে  পায়ে মেহেদীর চিহ্ন   লেগে  রয়েছে আর খবর নেই, তখন  অযু ও  গোসল হয়ে যাবে।  হ্যাঁ! যখন  বুঝতে  পারবে তখন  সেটা উঠিয়ে পানি প্রবাহিত করবে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া  (সংকলিত) , ৪র্থ খন্ড, ৬১৩  পৃষ্ঠা)  ❁  সূরমা  যদি   চোখের  কোনে বা পলকে থেকে    যায়,   আর   খবর    নেই।   বাহ্যিক     ভাবে   কোন অসুবিধা  নেই এবং নামাযের পর যদি চোখের কোণায় অনুভূত হয়,  তবে কোন   ভয়   নেই, নামায হয়ে যাবে। (প্রাগুক্ত)


ইনজেকশান নিলে অজু ভঙ্গ হবে কিনা?

=============

❁     মাংসের     মধ্যে    ইনজেকশান     দেয়ার     পর     যদি প্রবাহিত হওয়ার  মত রক্ত    বের   হয়,  তাহলে অযু  ভঙ্গ হয়ে    যাবে।    

❁    শিরায়    ইনজেকশান    দিয়ে    প্রথমে  উপরের  দিকে  যে  রক্ত  টানা  হয়  তা  যেহেতু  প্রবাহিত  হওয়ার    মত,    তাই    এর   দ্বারা   অযু    ভঙ্গ   হয়ে   যাবে। এমনিভাবে   

❁   গ্লোকোজ  ইত্যাদির   স্যালাইন  শিরার মধ্যে   লাগালে   অযু   ভঙ্গ    হয়ে   যাবে।   কেননা,     এতে প্রবাহিত হওয়ার মত রক্ত নলীতে এসে যায়। আর যদি প্রবাহিত হওয়ার মত রক্ত নলীতে না আসে তাহলে অযু ভঙ্গ    হবে   না।    

❁পরীক্ষা   করানোর   জন্য     সিরিঞ্জের মাধ্যমে  যে   রক্ত বের  করা হয় তা দ্বারা অযু  ভঙ্গ   হয়ে যাবে। কারণ এতে প্রবাহিত হওয়ার মত রক্ত বের হয়ে থাকে।   আর    এ   রক্ত   প্রস্রাবের    মতও   নাপাক।   তাই এরূপ   রক্ত    পূর্ণ   শিশি   পকেটে   নিয়ে   নামায   আদায়  করলে নামায হবে না। তাছাড়া রক্ত বা প্রস্রাবের শিশি যদিও তা ভালভাবে বন্ধ, মসজিদের ভিতর নিয়ে যেতে পারবে না, নিয়ে গেলে গুনাহগার হবে।


অসুস্থ চোখ থেকে প্রবাহিত অশ্রুর বিধান


❁    চোখের   অসুখের    কারণে    চোখ   থেকে   যে   অশ্রু  প্রবাহিত হয় তা  নাপাক। আর  এরূপ অশ্রু দ্বারা অযুও  ভঙ্গ হয়ে যায়। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩১০ পৃষ্ঠা) আফসোস!    অধিকাংশ    লোক    এ    মাসয়ালা    সম্পর্কে  অবগত   না   হওয়ার   কারণে   রুগ্ন    চক্ষু   হতে    যে   অশ্রু প্রবাহিত   হয়   তাকে   সাধারণ    অশ্রুর   মত    মনে   করে আস্তিন   বা  জামার  আচল   ইত্যাদি   দ্বারা  মুছে  কাপড়  নাপাক    করে    ফেলে।   

❁    অন্ধ   ব্যক্তির      চোখ    হতে রোগের   কারণে যে পানি  বের হয় তা নাপাক এবং তা  দ্বারা অযুও ভঙ্গ হয়ে যায়। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩০৬ পৃষ্ঠা)

অজু ভঙ্গের কারণ
স্বপ্নে অজু করতে দেখলে কি হয়
অজু করার দোয়া
অজু ও গোসলের ফরজ
অজু ভঙ্গের কারণ ৭টি
মেয়েদের অজু ভঙ্গের কারণ
তাহিয়াতুল অজু
অজু ভঙ্গের কারণ কয়টি

পাক এবং নাপাক আর্দ্রতা


❁   মানুষের  শরীর থেকে  যে  তরল আর্দ্রতা  বের   হয়, আর অযু ভঙ্গ করে না, তা পাক। উদাহরণ স্বরূপ- রক্ত বা পূঁজ    বের  হয়ে   গড়িয়ে না পড়লে  অথবা সামান্য বমি যা মুখ ভর্তি নয়, তা পাক। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩০৯ পৃষ্ঠা)


ফোস্কা ও ফোঁড়া সম্পর্কিত মাসআলা


❁ যদি  ফোস্কা নখে আঁচড়িয়ে  তুলে ফেলা  হয়     আর পানি প্রবাহিত   হয়, তাহলে  অযু ভেঙ্গে যাবে, অন্যথায় নয়।  (প্রাগুক্ত,   ৩০৫  পৃষ্ঠা)  

❁  ফোঁড়া  সম্পূর্ণ   সুস্থও  হয়ে   গেছে   কিন্তু   উপরে   মরা    চামড়া    বাকি   রয়েছে, যাতে মুখ ও ভিতরে  শূন্য   জায়গা  আছে। যদিঐ   শূন্য  জায়গা পানিতে ভরে যায় আর ঐ পানি চেপে বের করা হয়,   তাহলে  অযু    ভঙ্গ   হবে  না।   ঐ    বের   করা   পানি নাপাকও নয়। হ্যাঁ, যদি ঐ  শূন্য জায়গার ভিতর থেকে বের করা পানিতে রক্ত ইত্যাদি অবশিষ্ট থাকে, তাহলে অযুও     ভঙ্গ     হবে     আর      ঐ     পানিও     নাপাক      হবে। (ফতোওয়ায়ে      রযবীয়া       (সংকলিত)      ,       ১ম      খন্ড, ৩৫৫-৩৫৬  পৃষ্ঠা)   

❁খোস-পাঁচড়া   অথবা    ফোঁড়ার মধ্যে যদি প্রবাহিত হওয়ার মত তরল পদার্থ না থাকে, শুধুমাত্র আদ্র থাকে, যাতে বার বার কাপড় লেগে যায়, ঐ লাচা পাক। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩১০ পৃষ্ঠা) 

❁  নাক  পরিষ্কার  করার  পর  যদি  নাক  থেকে  জমাট  রক্ত বের হয় তাহলে অযু  ভঙ্গ হবে না। তবে অযু করে নেয়া   উত্তম। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংকলিত)  ,  ১ম  খন্ড, ২৮১ পৃষ্ঠা)


বমি দ্বারা কখন অজু ভঙ্গ হয়?

মুখভর্তি বমিতে যদি খাদ্য, পানি  বা  পিত্ত রঙের  তিক্ত  পানি  নির্গত হয় তাহলে অযু ভঙ্গ হয়ে যায়। যে বমিকে নিবারণ করা  খুবই  কষ্টকর তাকে  মুখভর্তি  বমি  বলে। মুখভর্তি বমি প্রস্রাবের মতই নাপাক। তাই এরূপ বমির ছিটা     থেকে    কাপড়    ও      শরীর     রক্ষা    করা    একান্ত  প্রয়োজন।   (বাহারে   শরীয়াত,   ১ম   খন্ড,   ৩০৬   এবং  ৩৯০ পৃষ্ঠা)


হাসির হুকুম এবং কখন হাসলে অজু ভঙ্গ হয়

(১) রুকু সিজদা বিশিষ্ট নামাযে কোন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি অট্টহাসি দিলো অর্থাৎ এত জোরে  হাসল যে    পার্শ্ববর্তী লোকেরা  তা  শুনে    ফেললো,  তাহলে  অযুও   ভঙ্গ  হয়ে যাবে  এবং  নামাযও  ভঙ্গ হয়ে  যাবে।   আর   যদি এমন আওয়াজে  হাসে   যে,  হাসির আওয়াজ  শুধু সে  নিজেই শুনতে    পায়। তাহলে নামায  ভঙ্গ  হয়ে যাবে, অযু  ভঙ্গ হবে না। আর মুচকি হাসি দিলে অযু নামায কিছুই ভঙ্গ হয় না।  কেননা, মুচকি হাসিতে মোটেই    আওয়াজ হয়  না,  শুধুমাত্র দাঁত দেখা যায়। (মারাকিউল  ফালাহ, ৬৪ পৃষ্ঠা)  

(২)   কোন   প্রাপ্ত  বয়স্ক  ব্যক্তি  জানাযার  নামাযে  অট্টহাসি দিলে নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে কিন্তু অযু ভঙ্গ হবে না। (প্রাগুক্ত) 

(৩) নামাযের  বাইরে অট্টহাসি দিলে অযু ভঙ্গ     হবে     না     তবে     পুনরায়      অযু      করা     মুস্তাহাব। (মারাকিউল ফালাহ, ৬০ পৃষ্ঠা) আমাদের প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم কখনো অট্টহাসি দেননি। তাই অট্টহাসি  বর্জন  করে এবং উচ্চ স্বরে না হেসে প্রিয় নবী صَلَّی  اللهُ  تَعَالٰی   عَلَیۡہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم  এর  এ  প্রিয়   সুন্নাতকে জীবন্ত রাখার প্রতি আমাদের  সচেষ্ট হওয়া উচিত। নবী করীম,  রউফুর  রহীম,   রাসূলে  আমীন    صَلَّی   اللهُ  تَعَالٰی  عَلَیۡہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم  ইরশাদ  করেন:  “صَلَّی  اللهُ  تَعَالٰی  عَلَیۡہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  অর্থাৎ-আর অট্টহাসি  শয়তানের পক্ষ   থেকে মুচকি হাসি আল্লাহ্র পক্ষ থেকে।” (আল মুজামুল সাগীর লিত তাবরানী, ২য় খন্ড, ১০৪ পৃষ্ঠা)

সতর দেখা গেলে কি অযু ভঙ্গ হয়ে যায়?

জন  সাধারণের   মধ্যে  প্রচলন  আছে  যে, হাঁটু বা সতর  খুলে গেলে,  নিজের  কিংবা অপরের  সতর দেখা  গেলে অযু  ভঙ্গ   হয়ে  যায়।  কিন্তু  এটা    একেবারে   ভুল।  হ্যাঁ! অযুর সময়  নাভী  থেকে  হাঁটু   পর্যন্ত  সমস্ত   সতর ঢেকে রাখা    অযুর  আদব।   বরং     প্রসাব  ও  পায়খানা   সেরে তাড়াতাড়ি সতর ঢেকে  ফেলা  উচিত। কেননা,   বিনা  প্রয়োজনে  সতর খোলা  রাখা নিষেধ   এবং জন সম্মুখে  সতর খোলা হারাম। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩০৯ পৃষ্ঠা)












একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Be alert before spamming comments.

নবীনতর পূর্বতন

Sponsored

Responsive Ad