৭৭ ফিলিস্তিনি বন্দি কারাগারেই হাফেজ হলেন

 

কারাগারে হাফেজ হলেন ৭৭ ফিলিস্তিনি বন্দি

মানুষের ইচ্ছা শক্তি এমন একটি আধ্মাত্তিক বিষয় যা মানুষ অনেক দূরে নিয়ে যায় । ঠিক তেমনই উদাহরণ তৈরি করলেন ফিলিস্তিনের ৭৭ কারাবন্দী। কারাগারে থেকেই পবিত্র কুরআনের হাফেজ হয়েছেন তারা। প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। পত্রিকাটি জানায়, ২০ বছর আগে ফিলিস্তিনের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজায় ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন রামি আবু মোস্তফা। ২০০২ সালে ইসরাইলি দখলদার সৈন্যরা আটক করে ফিলিস্তিনি এ তরুণকে। এরপর তার ২০ বছর কারাদণ্ড হয়। কিন্তু জেলে প্রবেশের পর থেকেই ২০ বছর বয়সী এ তরুণের ভাবনায় ছিল অন্য কিছু। দীর্ঘ বন্দীজীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানোর প্রবল ইচ্ছা ছিল তার। 

অবশেষে গত ২২ অক্টোবর ৪২ বছর বয়সে জেল থেকে মুক্তি পান রামি আবু মোস্তফা। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়াশোনা শেষ করতে না পারলেও এ সময়ে তিনি সনদসহ পুরো কোরআন হিফজ করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন একাডেমিক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি পাঁচ বছরে সনদসহ হাফেজ হয়েছেন। গাজার অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স কলেজ থেকে ডিপ্লোমা, আল-আকসা ইউনিভার্সিটি থেকে ইতিহাসে অনার্স, আল-কুদস ইউনিভার্সিটি থেকে ইসরাইল স্টাডিজ বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি এবং লেবাননের দাওয়াহ কলেজ থেকে ইসলামিক ইকোনমিকসে দ্বিতীয় মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এসব ডিগ্রির চেয়ে তার কাছে কুরআন হিফজের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ইসরাইলের কারাগারে থাকাবস্থায় কুরআন হিফজ করা ৭৭ বন্দীর একজন রামি আবু মোস্তফা। বৃহস্পতিবার হামাসের উদ্যোগে গাজায় তাদের সম্মাননায় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

বন্দী হাফেজদের উদ্দেশে মুক্তির আশা ব্যক্ত করে শুভেচ্ছা বক্তব্যে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া বলেন, ‘হাফেজ বন্দীদের সবাইকে শুভেচ্ছা। পুরো কারাগারকে তারা ইউসুফের মাদরাসায় পরিণত করেছে। কেননা তারা ইউসুফ আ:-এর পথ অনুসরণ করেছে, যিনি কারাগারে গিয়েও দাওয়াতের কথা ভুলে যাননি।’ দখলদার ইসরাইলের কারাগারে দুই দশক পর মুক্তি পেয়ে রামি বলেছেন, ‘দখলদার গোষ্ঠী আমাদের দেহকে বন্দী করতে পারলেও তারা কখনো আমাদের চিন্তাশক্তি ও দৃঢ় ইচ্ছাকে বন্দী করতে পারেনি। পবিত্র কুরআন মানুষের সর্বোত্তম পাথেয়। আর একজন বন্দীর জন্য তা আশা জাগায় এবং শক্তি জোগায়। তাই পুরো কুরআন হিফজ করা আমার জন্য খুবই সম্মানের ও চ্যালেঞ্জের। তা মোটেও সহজ ও নিষ্কণ্টক ছিল না; বরং নানা উপায়ে কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের জন্য সমস্যা ও সংকট তৈরি করত। আর স্বাভাবিক পরিস্থিতি হিফজের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে সমস্যায় না পড়ায় অনেক বন্দী মাত্র ছয় মাসেও হিফজ করেছেন। আবার অনেকের সমস্যায় পড়ে ১০ বছর সময় লেগেছে।’ 

আল-জাজিরা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Be alert before spamming comments.

নবীনতর পূর্বতন

Sponsored

Responsive Ad