স্টিভ জবস এর জীবনী: পৃথিবী বদলে দেয়া এক জিনিয়াস

 স্টিভ জবস এর জীবনী: পৃথিবী বদলে দেয়া এক জিনিয়াস

সেরা উদ্যোক্তাদের মধ্যে তিনি হলেন একজন। শুধু একটি কথা মনে রেখো আমি খুব তাড়াতাড়ি মরে যাবো এই কথাটি জীবনের সব থেকে বড় সিদ্ধান্ত গুলো নিতে সাহায্য করবে। কারন যখন আমি মৃত্যুর কথা ভেবে থাকি তখন সমস্ত গৌরব অহংকার হারিয়ে যায় শুধু সেটাই থাকে যেটা সত্যি আমার খুব প্রয়োজন। বিখ্যাত বানীটি করেছেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অনুপ্রেরণা গল্পের এক দৃষ্টান্ত স্টিভ জবস। যিনি নিজের বুদ্ধি আর অক্লান্ত পরিশ্রম দ্বারা পৃথিবীর সব থেকে প্রভাবশালী কোম্পানি তৈরি করেছেন। 



তিনি জন্ম গ্রহণ করেছিলেন ফেব্রুয়ারি ২৪-১৯৫৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়াতে তার মা ছিলেন একজন অবিবাহিত এবং কলেজ স্টুডেন্ট। তাই তাকে নিজের কাছে রাখতে পারেনি এবং তাকে একটি পরিবারের কাছে দত্তক দেওয়ার কথা ভাবে। পরে পলজবস ও ক্লিরাজবস একটি গরিব পরিবারের কাছে দিয়ে দেয় কিন্তু শর্ত রাখেন স্টিভকে উচ্চ শিক্ষা দিতে হবে এবং তারা সব কিছু মেনে নিয়ে স্টিভকে গ্রহণ করেন। পলজবস ও ক্লিরাজবস এর কাছে বেশি টাকা ছিলো না তাও তারা স্টিভ এর কোন চাওয়া অপূরণ রাখেন নি। 

জবসের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়েছিলো মন্টালমা স্কুল থেকে ১৯৭২ সালে ১৭ বছর বয়সে জবস খুব দামি কলেজে স্ট্যানফোর্ডে ভর্তি হন। পড়া-লেখা করাতে গিয়ে তার বাবা-মার সকল টাকা শেষ হয়ে যায় ৬ মাস পরে স্টিভ এর খুব কষ্ট হয় তার বাবা-মাকে দেখে। হতাস হয়ে তিনি কলেজ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে এবং তার কাছে থাকার মত কোন বাড়ি ছিল না তাই তিনি তার এক বন্ধুর রুমের মেঝেতে ঘুমাতেন। 

কোল্ডিংস এর বোতল বিক্রি করে যা টাকা পেতেন সেটা দিয়ে খাবার খেতেন প্রতি রবিবারে ১১ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে একটা গির্জায় যেতেন ভালো খাবার খেতে। কিছুদিন পরে সে একটা ব্যাবসার কাজে লেগে পরেন এবং বাবার গ্যারেজে বসে তার এক বন্ধুর সাথে অপারেটিং সিস্টেম MAC-IN-TOSH তৈরি করেন। এর পর নিজের কঠোর পরিশ্রম দিয়ে ১৯৭৫ সালে ২০ বছর বয়সে অ্যাপল কোম্পানি তৈরি করেন। যা মাত্র ১০ বছর পর ৪ হাজার লোকের কোম্পানিতে পরিনত হয়ে যায় যার মূল্য দারায় ২ বিলিয়ন ডলার। 


কিন্তু স্টিভ জবসের এই সফলতা তার জিবনে বেশি দিন টিকলো না। নিজের কোম্পানির পার্টনারদের সাথে মতের অমিলের কারনে কোম্পানির মার্কেট খারাপ হতে থাকে। কোম্পানির একটা বোর্ড মিটিং এ সকল দোষারোপ তার উপরে দেওয়া হয় এবং তাকে নিজের কোম্পানি থেকে ১৯৮৫ সালে বের করে দেওয়া হয়। এটিই ছিলো স্টিভ জবসের সব থেকে বড় দুঃখের সময়! কিছু দিন স্টিভ খুব কষ্টে কাটালেন এবং কষ্ট থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে PIXAR কোম্পানি তৈরি করেন। 

পিকচার পৃথিবীর প্রথম এনিমেশন মুভি টয়স্টরি তৈরি করে, বর্তমান পিকচার পৃথিবীর সব থেকে বড় এনিমেশন স্টুডিও। এর কিছু দিন পরে জবস APPLE কোম্পানিকে ক্রয় করে নেন। এইভাবেই জবস তার আগের কোম্পানিতে ফিরে আসেন এবং অ্যাপল কোম্পানির CEO হয়ে যান। তিনি মনে করেন প্রোডাক্ট Quantity নয় Quality উপরে নজর দিয়ে হবে। ৫ অক্টোবর ২০১১ কান্সারের কারনে ক্যালিফোর্নিয়াতে মৃত্যু বরন করেন। তিনি বলেছিলেন যারা পাগলের মত মনে করে পৃথিবীকে পালটাতে পারবে তারাই পালটাতে পারে। 


আমরা এই গল্প থেকে কি বুঝতে পারি? একটি মানুষ কত বার ব্যার্থ হবার পরেও সে হাল ছেড়ে না দিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে নিজেকে সেরা করেছেন। কখনোই নিজের জীবনকে বৃথা ভাবেনি সময়ের সাথে যুদ্ধ করে সপ্নকে সত্যি বলে রূপ দিয়েছেন। আমাদের সকল দুঃখ কষ্ট থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিৎ নিজেকে বুঝাতে হবে আমাকে পারতেই হবে, কেন আমি পারব না। স্বপ্ন দেখেন বড় বড় আর অনেক ছোট ছোট কাজ দিয়ে শুরু করেন কিছু করুন আগামি কালের জন্য। যারা আজ আপনাকে নিয়ে উপহাস করে তাদেরকে দেখিয়ে দিন আপনি কি করতে পারেন। 


স্টিভ বলেছেন আমাদের সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা অল্পতেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি অন্তত নিজের উপরে বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যান। আপনি আজ থেকে নিজেকে নিয়ে ভাবুন, কি করছেন নিজের জন্য? আপনি আপনার মধ্য থেকে জ্বলে উঠুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Be alert before spamming comments.

নবীনতর পূর্বতন

Sponsored

Responsive Ad