মিলাদ-কিয়াম কি জায়েজ নাকি নাজায়েজ এই বিষয়ে জানুন


প্রসঙ্গ: প্রচলিত কিয়ামের স্বরূপ ও হুকুম 

প্রিয় সত্য সন্ধানী বিবেকবান মুসলিম ভাইয়েরা, খারেজীয়ত, নজদিয়্যত, ওয়াহাবিয়্যত সবশেষ দেওবন্দিয়্যতের ভূতে পাওয়া হাটহাজারী মাদ্রাসার এসব মুফতিন-মফতারী ছাহেবানরা ‘এক্সে রিপোর্ট’ নামে এ বস্তা পঁচা দূর্গন্ধময় পুস্তিকায় উক্ত শিরোনামে বালখিল্য স্বরূপ কিছু ন্যাকামী-বোকামী প্রশ্ন লিখে ৬, ৭, ৮ ও ৯ কয়েকটা পৃষ্ঠা অনর্থক শ্রাদ্ধ দিয়েছেন। দেখুন, এ মহারথীরারা কি লিখতেছেন-


* কিয়ামকারীদের দাবী মতে রাসূল (সা.) এর আলোচনার সময় তাঁর রূহ মুবারক হাজির হয়। তাই তখন নবীজীর সম্মানের স্বার্থে কিয়াম করা জরুরী, অন্যথায় নবীজীর শানে বেয়াদবী হয়।


* তাদের এই দাবী ও বিশ্বাস একেবারে ভিত্তিহীন। কেননা তাদের বহু মাহফিলে অনেক সময় ঘন্টার পর ঘন্টা নবীজীর আলোচনা হয়। দুরূদ-সালাম পাঠ করা হয়। কিন্তু একজনও তো কিয়াম করেনা। এটা নবীজীর শানে বেয়াদবী নয়?

* রাসূল (সা.) এর স্বীকৃতি প্রাপ্ত সর্বশ্রেষ্ঠ দুরূদ হচ্ছে ‘দুরূদে ইবরাহীম’ আর মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ হালত হচ্ছে নামাযের হালত। কিন্তু কিয়ামকারীরা নামাযে দুরূদ পড়ার সময় কিয়াম করেন না। এটা কি নবীজীর শানে বেয়াদবী নয়?

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা, দেওর বান্দারা এ প্রতারণা মূলক কথাগুলোকে ভিত্তি করে একের পর এক ২৩ টা মূর্খতাপূর্ণ হাস্যকর প্রশ্ন মালা সাজিয়েছে। ইনশাআল্লাহ্ আমরা এসব প্রতারকদের মুখোশ উম্মোচনে আপনাদের সচেতন মনযোগ আকর্ষণ করছি।

* দেওবন্দীদের হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী সাহেব স্বীয় রচিত পুস্তক ‘ইফাদাতে ইয়াউমিয়া’ ৩য় খণ্ড, ১৬৬ পৃষ্ঠায় এবং ৪র্থ খণ্ড ১৭০ পৃষ্ঠায় লিখেছেন- ‘ওয়াহাবী হচ্ছে ‘‘বেআদব বা-ঈমান’’ আর বিদআতির অর্থ ‘‘বা-আদব বে-ঈমান’’। বাস্তবে ঈমানের জন্যে আদব শর্ত। তাই আদব নাই তো ঈমানও নাই। এটা তো থানবী সাহেবই স্বীকার করলেন যে, দেওবন্দী ওয়াহাবীরা বে-আদব, অর্থাৎ গোস্তাখে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম। তাই ‘‘এক্সে রিপোর্ট’’ লিখকের বক্তব্য শুনে বলতে চাই-
‘‘শুনলে মোদের হাসী পায়
বে-আদবরা আদব শেখায়।’’

কোন সুন্নী আলেম তো দূরে থাক একজন সাধারণ সুন্নী মুসলমানও একথা বলবেন না এবং ধারণা করেন না যে, ‘‘যেখানে যখনই রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর আলোচনা করা কিম্বা তাঁর উপর দুরূদ পড়া হয় নবীজীর রূহ মুবারক হাজির হয়, তাই সম্মানার্থে কিয়াম করা হয়।’’ এ সব কিছু ক্বরনুশ শয়তান দেওবন্দী মুফতারীনদের ইফতিরা তথা অগণিত মিথ্যাচারিতার অন্তর্ভুক্ত।
বরং আহলে হক সুন্নী ওলামা কেরাম সেকাল থেকে একাল পর্যন্ত ‘তা’জীমে যিকরে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে ইবাদত হিসেবে গণ্য করেন- যাকে সংগত কারণেই মাওলেদুন্নবী বা মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নামেই অভিহিত করা হয়। কারণ মিলাদে মোস্তফা তথা প্রিয় নবীজীর শুভ আগমনই সৃষ্টি স্রষ্টাকে তথা তাঁর সকল নে’মতকে লাভ করার একমাত্র উসীলায়ে ওজমা।

আল্লামা সৈয়্যদ আহমদ বরযন্জী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি মিলাদে বরযন্জী গ্রন্থে ফরমাচ্ছেন-
وقد استحسن القيام عند ذكر مولده الشريف ائمة ذورواية وروية-
অর্থাৎ- মাহফিলে মিলাদে খাছ যিক্রে বেলাদতে মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর তা’জীম তথা সম্মানার্থে কিয়াম তথা আদবের সাথে দাঁড়িয়ে ইয়া নবী সালাম আলাইকা . . . . . বলে সালামী আরয করা সকল জ্ঞানী-গুনী ওলামা মুস্তাহসান মানে উত্তম কাজ বলে গণ্য করেছেন। দাজ্জ্বালের প্রেতাত্মা এসব দেওর বান্দারা দাতা লাহোরী ও খাজা আজমীরীর ফয়ুজাতধন্য ভারতবর্ষের আশেকানে রাসূল ও আশেকানে আউলিয়া মুসলমানদের ‘আইওয়াশ তথা ধোকা দেওয়ার জন্যে একজন সুন্নী আক্বীদা সম্পন্ন বুযর্গ পীর হাজী এমদাদুল্লাহ্ মুহাজিরে মক্কী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি’র হাতে মুরীদে না-মুরাদ হয়েছিল।

এ গোস্তাখানে রাসূল না-মুরাদদেরকে বুঝানোর জন্যে উনি নিজ হাতে রচনা করেছেন ‘‘ফায়সালা হাফত মাসআলা।’’ এতে ৪১৫ নম্বর পৃষ্ঠায় লিখেছেন- ‘কিয়াম মৌলিক দিক থেকে ইবাদত নয়। কিন্তু তা’জীমে যিকরে রাসূল নিঃসন্দেহে ইবাদত। তবে যিকরে রাসূল তথা মিলাদ পাকের এক বিশেষ মুহূর্ত তথা বেলাদতে পাকের আলোচনার মুহূর্তে খাস যিকরে বেলাদতের সম্মানার্থে কিয়াম করা মুস্তাহসান বা উত্তম পন্থা হিসেবে গণ্য।

হাজী ছাহেব স্বয়ং ‘মিলাদ-কিয়াম’ এর ব্যাপারে নিজের আমল এভাবেই ব্যক্ত করেছেন-
اور مشرب فقيركا يه هے كه محفل مولود ميں شريك هوتا هو بلكه ذريعه بركات سمجھكر منعقد كرتا هوں اور قيام ميں لطف ولذت پاتا هوں-
অর্থাৎ- এ ব্যাপারে আমার আমল হচ্ছে- আমি মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহণ করি, বরং বরকাতের উসীলা হিসেবে প্রায়ই মিলাদ মাহফিল উদ্যাপন করি। আর কিয়ামে মিলাদের সময় রূহানীভাবে বড়ই লজ্জত ও আত্মিক স্বস্তি পাই।

জিজ্ঞেস করুন এ দেওর বান্দা মুফতারীনদের যে হাজী ছাহেব কি প্রচলিত মিলাদ-কিয়াম করেছেন? না অন্য কোন জগত থেকে পাওয়া এলহামী মিলাদ করেছেন? তাহলে ন্যাকামী-বোকামী-ছেলেমী প্রশ্নবাণ আশেকে রাসূল সুন্নী মুসলমানদের দিকে কেন? বাস্তবে লজ্জা-শরম বিসর্জন দিতে পারলে তো কথাই নেই। ‘বে-হায়া বাশ্ ওয়া হারছে খা-হী কুন্।’

শায়খ আলাভী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন- * কিয়ামে মিলাদ মুসলিম দুনিয়ার পূর্ব-পশ্চিম সর্বাঞ্চলের ওলামায়ে ইসলাম কিয়ামে মিলাদকে مستحسن অর্থাৎ উত্তম মনে করেন। হাদীসে পাকে হযরত আবদুল্লাহ্ বিন মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত ما راه المومنون حسنا فهو عند الله حسن- ‘মুমিন বান্দারা যা উত্তম মনে করেন আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার তাই উত্তম।

* আহলে ফজল মানে মর্যাদাবান ব্যক্তিদের সম্মানার্থে দাঁড়ানো শরীয়তের দৃষ্টিতে অনেক দলিল দ্বারাই প্রমাণিত। বিশ্ব বিশ্র“ত সর্বজন মান্য আল্লামা ইমাম নবভী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি কিয়ামে মিলাদের বিষয়ে একটি পৃথক (جزء مستقل) হাদিসের কিতাব রচনা করেছেন। ইমাম নবভী রাহমাতুল্লাহি আলায়হির বিরোধীতাকারীদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছেন আল্লামা ইবনে হাজর রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ‘‘রাফ্উল মালাম আনিল কায়েল বিইস্তিহবারিল ক্বিয়াম’’ নামক কিতাব লিখে।

* শায়খ সৈয়দ আলাভী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ফরমাচ্ছেন, এ বিষয়ে সহীহ বুখারী-মুসলিম শরীফে বর্ণিত হয়েছে; হযরত সা’দ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র সম্মানার্থে মদীনার আনসারদের দাঁড়ানোর জন্যে আদেশ দান করেছেন স্বয়ং রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম।

* এ ছাড়া হযরত খাতুনে জান্নাত রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার আগমনে স্বয়ং রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে তাঁকে বরণ করা এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর আমগনে খাতুনে জান্নাত রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা দাঁড়িয়ে সম্মান করার কথা প্রসিদ্ধ বর্ণনায় এসেছে।

‘‘হয়তো দেওবন্দীরা বলবে, তাতো রাসূলের পার্থিব জীবনের কথা, এখনতো রাসূল নেই।’’ আমরা বিবেকবানদের বিনয়ের সাথে বলব- এরা অন্যের ঘরে কেবল লাল রং দেখতেই আগুন আগুন বলে চিৎকার করে অথচ বাস্তব আগুনে ওদের ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে তার খবর নেই। দেওর বান্দাদের বড় হুজুর থানবী সাহেব ‘‘হেকায়াতে আউলিয়া’’ নামক গ্রন্থ লিখে ভূমিকায় বলছেন ওলীদের সোহবত ফুলের সৌরভের মত। মাটি যেমন ফুলের সান্নিধ্যে সুগন্ধযুক্ত হয়ে যায় তেমনি ওলীর সোহবতও মানুষকে দামী বানায়। তবে ফুলের চাইতেও ওলীগণ আরও মহিমান্বিত। ফুল নিয়ে আলোচনা করলে কেউ সুবাসিত হয় না, কিন্তু ওলীদের আলোচনা করলে মানুষ সুবাসিত ও গৌরবান্বিত হয়। প্রবাদ আছে ‘‘যিকরে হাবীবে কম নেহী ওয়াস্লে হাবীব সে।’’ শায়খ সৈয়দ আলাভী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ফরমাচ্ছেন প্রিয়তম রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর জাহেরী হায়াত না পেলেও প্রেমসিক্ত ও ভক্তিপূর্ণ অন্তরে নবীজী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামার স্মরণও তো উম্মতের জন্যে কম সৌভাগ্যের নয়।

* প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা, সহীহ বুখারী শরীফ সহ বিভিন্ন হাদিসের কিতাবে বর্ণিত, মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ইজ্জত ফরমাচ্ছেন- বান্দা ফরজ এবং নফল ইবাদতের উসীলায় আল্লাহর মুহাব্বত লাভে ধন্য হয়। আর তখন সে বান্দার হাত-পা, চোখ-কান আল্লাহর নূরানী কুদরতের প্রকাশ মাধ্যম হয়। ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন, এমতাবস্থায় ঐ বান্দা দূরে-কাছে সমান ভাবে দেখতে পান ও শুনতে পান এবং কাছে দূরে, সহজ-কঠিন সবকিছুতেই সমান ভাবে নিজ প্রভাব প্রয়োগ করতে পারে।

সুস্থ ও স্বাধীন বিবেক যাদের একটু চিন্তা করবেন না? যদি একজন মুমিন-মুত্তাকী বান্দা নবীজীর গোলামী করে এ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে তখন আ-ক্বা ওয়া মাওলা মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শান-মর্যাদা ও খোদা প্রদত্ত ক্ষমতা কত হতে পারে!

* থানবী সাহেব স্বীয় পীর হাজী সাহেবের কারামত বর্ণনা করতে গিয়ে লিখেছেন, একবার খাদেম পীর সাহেবের কোমর দাবাচ্ছিল। দেখতে পেল কোন অংশে চামড়া থেঁতলে গেছে। বার বার জিজ্ঞেস করার পর বললেন; তোমাদের এক পীর ভাই সমুদ্র পথে হজ্জে যাওয়ার সময় তুফানে জাহাজ ডুবে যাচ্ছিল। তার কান্না সহ্য করতে না পেরে সাগরে নেমে জাহাজ উদ্ধার করতে গিয়ে একটু লেগেছে। বাহ! বাহ!! থানবী সাহেবের কথা!!! না মানলে কিন্তু লাঈন হয়ে যাবেন!! মহান আল্লাহর প্রিয়তম রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ফরমাচ্ছেন, আল্লাহ্ পাক পুরো কায়েনাত আমার সামনে এভাবে সংকোচিত করে দিয়েছেন ঠিক যেন আমার সামনে আমার হাতের তালু।

* থানবী সাহেব হেকায়াতে আউলিয়া গ্রন্থে লিখেছেন- শাহ্ ওয়ালিউল্লাহ্ দেহলভী রাহমাতুল্লাহি আলায়হির মৃত্যু শয্যায় রাহমাতুল্লিল আলামীন সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাশরীফ এনেছেন। এখন সশরীরে এসেছেন নাকি দেহকে নি®প্রাণ ফেলে রেখে রূহ এসেছেন? থানবী কিম্বা শাহ্ সাহেব কেউ তো কিছুই বলেন নি! হাটহাজারীর মুফতিন-মুফতারীনগণ কোনটা বলবেন?

* বলছে নবীজীর স্বীকৃত শ্রেষ্ঠ দুরূদ দুরূদে ইবরাহীমী। নামাযে এ দুরূদ পড়ার সময় কিয়াম করেনা কেন? আসলে দাজ্জালের দল কথায় কথায় ফিৎনা আর প্রতারণা। কে বলেছে দুরূদ শরীফ পড়তে গেলেই কিয়াম করা হয়। لعنة الله على الكاذبين । আশেকানে মোস্তফা সুন্নী আলেমগণ বলেন, যিকরে বেলাদতে মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর তা’জীমের জন্যে কিয়াম।

* নবীজীর স্বীকৃত দুরূদ নাকি দুরূদে ইবরাহীমী। এ মূর্খরা ‘স্বীকৃত’ আর ‘শেখানো’ পার্থক্যও বোঝে না। হাদীস গ্রন্থে নামায অধ্যায়ে এসেছে, সাহাবায়ে কেরাম নবীজীর (সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম) দরবারে আরয করলেন- ইয়া রাসূলাল্লাহ্ নামাযে আপনাকে সালাম দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা অবহিত হয়েছি, এখন (নামাযে) আপনার উপর দুরূদ পড়ার নিয়ম কি? নবীজী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তখন সাহাবীদের দুরূদে ইবরাহীমী শিখিয়ে দেন। এদের কথায় মনে হচ্ছে আজ পর্যন্ত লক্ষ কোটি মুমিন-মুত্তাকী আশেক্বে রাসূল যত দুরূদ-সালাম লিখেছেন পড়েছেন রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম কোনটাকে সমর্থনই করেননি। তাদের মুরব্বীদের মধ্যে খলীল আম্বিটুবী স্বীকারুক্তি মতে আরেফে কামেল ইমাম সৈয়দ মুহাম্মদ বিন সুলাইমান জাযূলী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি প্রণিত দুরূদ শরীফের কিতাব দালায়েলুল খায়রাত শরীফ নিয়মিত তাদের মাঝে সিলসিলার সবকের অন্তর্ভুক্ত। হোক না সেটা তাদের অগণিত মিথ্যাচারের অন্তর্ভুক্ত। কারণ যাদের খোদাও তো ইচ্ছা করলে মিথ্যা বলতে পারে।

প্রিয় বিবেক সম্পন্ন ইসলামী ভাইয়েরা,
আমাদের এ পর্যন্ত বর্ণনায় তাদের মুর্খতাসুলভ-হাস্যকর প্রশ্নাবলির উত্তর হয়ে গেছে। এতদসত্ত্বেও তাদের আরও কিছু মিথ্যাচারিতা ও বিভ্রান্তিকর কথার পোষ্ট মর্টেম করতে হচ্ছে।

* এরা বিভ্রান্তি ছড়াতে বলে, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম কিয়াম পছন্দ করতেন না তাই বলে দিয়েছেন তোমরা আজমীদের মত কিয়াম করো না।

প্রিয় ভাইয়েরা,
আমরা প্রথমত: প্রমাণ করে দিয়েছি যে, নবীজী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নিজেও খাতুনে জান্নাতের জন্য কিয়াম করেছেন এবং উনিও নবীজীর সম্মানার্থে কিয়াম করতেন। বাকি রইল আজমীদের মত . . . .। তা হচ্ছে অহংকারী দাম্ভিক ব্যক্তিদের মত মানুষকে কিয়াম করানো, অথবা ছাহেবে এলমও ফজল ব্যক্তিদের সম্মানে যে আদব ও শিষ্ঠাচারিতা বজায় রাখতে হয় তা না করে অশিক্ষিত মুর্খ গেঁয়ো লোকদের মত শিষ্ঠাচার বর্জিত কিয়াম করতে নিষেধ করেছেন।

* বলে, দুরূদ-সালাম পৌঁছে দেয়ার জন্যে ফেরেশতা রয়েছে। তাই রাসূলকে আসতে হবে কেন? আমরা সুন্নীদের বক্তব্য হচ্ছে, আসা-যাওয়া শব্দই নবীজী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শানে ব্যবহার করার প্রয়োজন কোথায়? যিনি রওজা পাকে থেকেই আল্লাহর দেয়া ক্ষমতায় যা ইচ্ছা দেখতেও পান শুনতেও পান। সর্বদ্রষ্টা ও সর্বশ্রোতা আল্লাহ্ বান্দার আমল সমূহ লিখার জন্যে ফেরেশতা নিযুক্ত করেছেন। কেয়ামতের দিন প্রত্যেক উম্মতের জন্যে সাক্ষি উপস্থাপন করবেন, আবার সকল সাক্ষির উপরে চূড়ান্ত ও রাজসাক্ষি হবেন ‘মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ্’ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম। বলুন তো এসব কি আল্লাহ্ তা‘আলা বান্দার ভেতর-বাইর না দেখে, না শোনা কিম্বা নাজানার দলিল? আসলে হেদায়েতের মালিক আল্লাহ। তিনি যাকে গোস্তাখীর কারণে গোমরাহীর অন্ধকারে নিমজ্জিত রাখেন তাকে পথে আনবে কে?
* তাদের অভিযোগ, রাসূলের বিবিগণ আমাদের মা, আমরা উনাদের সম্মানে কিয়াম করি না কেন?

প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা,
এরা কি আল্লাহর কাছে প্রশ্ন করতে পারে না? যে তিনি ফেরেশতাদের নিয়ে কেবল নবীজীর উপর কেন দুরূদ পড়েছেন, অন্যদিকে আমাদেরকে কেবল নবীজীর উপর দুরূদ-সালাম পড়তে আদেশ করলেন? বাস্তবে এরাইতো ওরা যারা রাসূলকে সাধারণ মানুষ বলে, আল্লাহর সামনে নবী-রাসূলদের মর্যাদা মুচী-চামারের চাইতেও তুচ্ছ বলে। আমাদের মা-বোনদের চিন্তা তাদের করতে হবে না। যারা কিয়াম করেনি তারা ওয়াহাবী একথা সুন্নী আলেমগণ বলেন না। ওয়াহাবী বলতে বাইরে ফিটফাট ভেতরে বে-আদব গোস্তাখে রাসূলদেরই বুঝায়।

সুন্নী মা-বোনরা বে-আদব নন। তারা পর্দায় থেকে কিয়ামও করেন অকুন্ঠ সমর্থনও করেন এবং সাধ্যমত খেদমতও আঞ্জাম দেন। অতএব, করনুশ শয়তানদের পক্ষ থেকে চারকোটি সুন্নী মহিলাদের ওয়াহাবী বানাবার কুটকৌশল আর নিদ্রাহীন স্বপ্নবিলাসও মাটি হয়ে গেল না?

* মিলাদ কিয়াম বিরোধীদের অন্তহীন অভিযোগগুলোর একটি হচ্ছে- ইসলামী শরীয়তে ঈদ দুটি। ঈদে মিলাদুন্নবী নামে তৃতীয় এটা কেমন ঈদ।

বিবেকবান মুসলিম ভাইয়েরা,
ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আদ্বহা ইসলাম ধর্মে দু’টো ঈদের দিন। তবে যে ভাবার্থে এ দিন গুলোকে ঈদ বলা হয় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত সে ভাবার্থে ঈদে মিলাদুন্নবীকে ঈদ বলেও না মানেও না। মিলাদুন্নবী অর্থাৎ নবীয়্যে মুকাররম রাসূলে মু’আজ্জম নূরে মুজাস্সাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর মিলাদে পাক তথা ধরাধামে তাশরীফ আনয়নের আনন্দ আর খুশীকে এক পাল্লায় রেখে কোটি কোটি ঈদুল ফিতর-ঈদুল আদ্বহাকে অন্য পাল্লায় রাখলেও তো সমান হবে না। কারণ প্রথমত: এ দুটি ঈদের খুশী মুমিনদের জন্যে তাতেও কেবল মুত্তাকী-পরহেযগার ছায়েম-ক্বায়েম এবং হালাল পয়সায় কোরবানী দাতাতের জন্যে। অন্যদিকে ধরাপৃষ্ঠে নবীজীর শুভ জন্মের আনন্দ নেককার-বদকার, মুমিন-কাফের, মানব-দানব ফেরেশতাকুল সহ, পশু পাখী-কীট-পতঙ্গ, আরশ থেকে তাহতুচ্ছারা পর্যন্ত সৃষ্টি জগতের সবার জন্যে এমন কি স্বয়ং মহান স্রষ্টাও খুশী হয়েছেন প্রিয়তম রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণ করে। এরশাদ ফরমাচ্ছেন-
لقد من الله على المومنين اذ بعث فيهم رسولا-
অর্থাৎ ‘‘আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ রাসূল প্রেরণ করে মুমিনদের প্রতি বড্ড এহসান করেছেন।’’ প্রিয়তম রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর মাধ্যমে মুমিনদেরকে আদেশ করেছেন-
قل بفضل الله وبرحمته فبذالك فليفرحوا هو خير مّما يجمعون-
অর্থাৎ তোমরা মুমিনরা আল্লাহ্ পাকের রহমত ও মেহেরবানীর মূর্তপ্রতীক আমি রাসূলকে যে লাভ করেছ তজ্জন্য সর্বোচ্চ ও সাধ্যমত আনন্দ ও খুশী উদ্যাপন কর। এটা তোমাদের সারা জীবনের সম্পদ থেকেও উত্তম হবে।

তাই, মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মাহফিলকে ঈদ নামে অভিহিত করার অর্থই হচ্ছে সে অন্তহীন আনন্দ আর খুশীর দিকে ইঙ্গিত করা, নয়তো ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আজহাকে ঈদে মিলাদুন্নবীর সাথে তুলনা করাইতো বাতুলতা। কারণ এ দুটো আসে বৎসর শেষে একবার। আর মাহফিলে মিলাদ তথা প্রিয় নবীজীর পবিত্র সত্তা আর সীরাত ও সুন্নাত এর আলোচনার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা স্থান আর কালের গন্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়। বরং একজন মুমিন বান্দার জন্যে বৎসরে সর্বক্ষণে-সর্বস্থানে সংশোধিত পথে চলতে গেলে রাসূলে পাকের ভক্তিপূর্ণ স্মরণ ও আন্তরিক আলোচনা অত্যাবশ্যক ও অপরিহার্য। তবে সঙ্গত কারণেই সপ্তাহান্তে সোমবার এবং বৎসরান্তে মাহে রবিউল আউয়াল ও ১২ রবিউল আউয়াল শরীফ এর গুরুত্ব বেড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই এর বিরুদ্ধে আপত্তি করা আর অহেতুক প্রশ্ন উত্থাপন করা মুনাফেকী আর কপটতারই বহিঃপ্রকাশ।

* মিলাদ বিরোধী নজদী-খারেজী দেওবন্দীদের আরেকটি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মিলাদ পালন করেছেন রোযা রাখার মাধ্যমে। অথচ মিলাদ-কিয়াম সমর্থকরা উদ্যাপন করছে তেলাওয়াত-না’ত, ওয়াজ-তাকরীর সমাবেশ সহ সাধ্যমত তাবাররুকাত খানা-পিনার আয়োজনের মাধ্যমে। যা রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নিজে করেননি তা নিঃসন্দেহে বিদআত।

সুপ্রিয় জাগ্রত বিবেক মুমিন ভাইয়েরা,
এসব করনুশ শয়তানদের এ পর্যন্ত বিতর্কের বিষয় ছিল ‘মিলাদ-কিয়ামের অনুষ্ঠান বলতেই জায়েয নেই। কারণ কারো জন্ম দিবস মৃত্যু দিবস পালন করার কথা ক্বোরআন-সুন্নাহয় নেই।’’ এখন দেখি সুর পালটিয়ে মিলাদ যারা করেন তাদেরকে মিলাদ অনুষ্ঠান উদ্যাপনের নিয়ম শেখাতে চাচ্ছেন।

বেশতো ভাই, চাপাস্বরে কেন, উচ্চ স্বরেই স্বীকার করুন মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম উদ্যাপন জায়েয ও পুণ্যময় কাজ। আপত্তি করেছেন একে ঈদ কেন বলা হচ্ছে? আবার রাসূলের নিয়ম ‘রোযা রাখা’ বাদ দিয়ে নতুন নিয়ম কেন?

বিবেকবান ভাইয়েরা,
কোন নামী-দামী-সম্মানী মানুষের শুভ আবির্ভাব ওটা সৃজন দ্বারা হোক কিম্বা জন্ম আর আগমন দ্বারা হোক শরীয়ত আর ত্ববীয়ত (মানুষের স্বভাবজাত অভ্যাস) উভয় সূত্রে এটা ঈদের দিন হিসেবে প্রমাণিত। দেুখন; সপ্তাহান্তে জুমাবারকে ঈদের দিন বলা হয়। এ দিনের ফজীলত বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ফরমাচ্ছেন- وفيه خلق ادم এ দিন হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। একজন ব্যক্তির কাছে তার বন্ধু বেড়াতে আসল। ভাগ্যক্রমে সেদিন জুমাবার ছিল এবং ঈদুল ফিতর এর দিন ছিল। তখন সে ব্যক্তি খুশী হয়ে বলল-
عيد وعيد صرن مجتمعه-
وجه الحبيب وعيد الفطر والجمعه-
অর্থাৎ- আজ আমার জন্য তিনটা ঈদ একত্রিত হল। ১. বন্ধুর দর্শন, ২. ঈদুল ফিতর এবং ৩. পবিত্র জুমআর দিবস।
* মূল বিষয়টা যখন বৈধ বলে প্রমাণিত তখন এর সম্পাদন আর উদযাপনের নিয়ম নিগড়টা উম্মতে মুসলিমার অবস্থা, দৃষ্টি ভঙ্গি আর চিন্তা গবেষণার ভিত্তিতে নিরুপিত হয়। আল্লামা শায়খ সৈয়দ মুহাম্মদ বিন আলভী মালেকী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ফরমাচ্ছেন, এমন অনেক ইজতেহাদি তথা গবেষণা নির্ভর বিষয়াদি রয়েছে যা মূল বিষয়টা জায়েয তবে আনুষ্ঠানিকতায় ভিন্নতা এসেছে এমন বহু উদাহরণ রয়েছে।

সবিশেষ উল্লেখযোগ্য পবিত্র ক্বোরআনুল করিম, যার তিলাওয়াত এর মর্যাদা এটাকে হেফজ করার ও রাখার ফজীলত, পবিত্র ক্বোরআন শেখা আর শেখানোর মর্যাদা, একে ছাপিয়ে প্রকাশ করার মর্তবা ও মর্যাদা কেউ অস্বীকার করতে পারে না। অথচ বর্তমানে পবিত্র ক্বোরআনে হাকীমের তিলাওয়াত হেফজ এর শিক্ষা দান শিক্ষা গ্রহণ নানা বর্ণে-নানা রঙে কাগজে-ক্যাসেটে আর প্রচার-প্রসারে দৃষ্টিনন্দন যে বৈচিত্রময় পরিবর্তন, শৈল্পিক কারুকার্য খচিত মসজিদ নির্মাণ এসবই রাসূলে মকবূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পার্থিব হায়াতে বিদ্যমান ছিল?

* আল্লাহর নে’মতকে স্মরণ রাখতে আল্লাহ্ আমাদেরকে আদেশ করেছেন। মোল্লা আলী ক্বারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ‘আল্ মাওলিদুররাভী ফী মাওলিদিন্নবী’ কিতাবে প্রশ্ন করেছেন- اى نعمة افضل من بُرُوْزِ هذا النبى نبى الرحمة অর্থাৎ রাহমাতুল্লিল আলামীন সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শুভ আবির্ভাব (আগমন) এর চাইতে উত্তম নে’মত আর কি আছে।

* তাই প্রিয়তম রাসূলের পবিত্র ব্যক্তি সত্তা, সূরাত-সীরাত, বেলাদত, বে’সত, হিজরত, মক্কী জীবন-মাদানী জীবন সবই তো তাঁর স্মরণ।

আর তা একাকী কিম্বা সমাবেশ, রোযা রেখে, পবিত্র ক্বোরআন তিলাওয়াত করে প্রিয়তম রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পুতপবিত্র জীবনালেখ্য আলোচনা আর স্মৃতিচারণ করে যাই করবে সবই তো বৈধ। আল্লাহর হাবীব সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর মি’রাজ ভ্রমনের সময় হযরত জিবরীল আমীন আলাইহিস্ সালাম বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ এ জায়গায় দু’রাকাত নামায আদায় করুন। এর নাম বায়তুল্লাহাম হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম-এর জন্মস্থান মানে বেলাদতের জায়গা। প্রতীয়মান হল ‘স্মৃতিচারণ’ মহান আল্লাহর আদিষ্ঠ ও সমর্থিত এবং প্রিয়তম রাসূলের সম্পাদিত পবিত্র আমল সমূহের অন্তর্ভুক্ত।

* ইসলামের অন্যতম রুকুন ‘হজ্জ্ব’। বায়তুল্লাহ্ শরীফের তাওয়াফ থেকে আরম্ভ করে সাফা-মারওয়ার সাঈ, আরাফাতের অবস্থান, মুযদালিফায় রাত্রিযাপন, মিনা প্রান্তরে কোরবানী দান, শয়তানের প্রতীকে পাথর নিক্ষেপ স্মৃতিচারণ সর্বস্থানে। মূল আমলটা যথাযথ রেখে হাজীদের সুবিধার্থে সেখানকার পারিপার্শ্বিক পরিবেশে আমূল পরিবর্তন আর বিবর্তন কি সাধিত হয়নি? যা নিঃসন্দেহে সাহাবা সহ উত্তম যুগ সমূহে ছিল না। বলুন তো এ পরিবর্তিত পরিবেশে হজ্জ্বের কাজগুলো সম্পাদন করা বর্জনীয় বিদআত কিনা? মানতে হবে হচ্ছে না। হাঁ অবশ্যই হচ্ছে না। অতএব মিলাদুন্নবী উদ্যাপনের ক্ষেত্রেও পরিবর্তিত অবস্থায় প্রচলিত নিয়মাবলি যা শরীয়ত গর্হিত কার্যাবলি থেকে মুক্ত। নিঃসন্দেহে বর্জনীয় বিদআত নয় বরং উত্তম ইবাদত।
আল্লাহ্ পাক ফরমাচ্ছেন-وكلا نقص عليك من انباء الرسل ما نشبت به فوادك-
‘হে হাবীব, আমি রাসূলগণের প্রতিটি বৃত্তান্ত আপনাকে বলছি যা আপনার অন্তরকে স্বস্তি দিচ্ছে মজবুত করছে।
[হুদ- ১২০]

প্রতীয়মান হচ্ছে আম্বিয়ায়ে কেরামের আলোচনায় প্রিয়তম রাসূলের অন্তর শান্তি লাভ করে। তাহলে শ্রেষ্ঠতম রাসূলের আলোচনা, দুরূদ-সালাম তথা যিকরে মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মানে মাহফিলে মিলাদের আয়োজন নবীপ্রেমিক মুমিনদের অন্তরে কতবেশী স্বস্তি আর শান্তি করতে পারে তাতো ভাষা দিয়ে নয় আশেকের অন্তর দিয়েই অনুধাবন করতে হবে।
(চলবে)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Be alert before spamming comments.

নবীনতর পূর্বতন

Sponsored

Responsive Ad